রবিবার, ১২ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ৮:৫৮

শিরোনাম :
কথা দিচ্ছি আপনাদের সেবায় আমি সর্বদা পাশে থাকবো : চেয়ারম্যান প্রার্থী এসএম জাকির হোসেন উপজেলার উন্নয়নে আপনাদের পাশে আমি সর্বদা রয়েছি -ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিন মোটরসাইকেল প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা, আহত-২ সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়া কে এই জাকির হোসেন প্রচার-প্রচারণায় ভোটারদের মন জয় করছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম যারা আমার জন্য কাজ করেছে আমি তাদের রেখে কখনো পালিয়ে যাইনি-এসএম জাকির হোসেন রেমিটেন্স আহরণে রূপালী ব্যাংকের ২ দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইন সম্পন্ন সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা বরিশালের দুই উপজেলায় বৈধতা পেলেন ২৫ প্রার্থী ঝালকাঠিতে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ

বরিশালে বছরে ৬০ লাখ টাকার চাল-গম আত্মসাত!

dynamic-sidebar

অনলাইন ডেস্ক ::: বরিশালে এক বছরে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা মূল্যের চাল-গম ওজনে কম দেয়া হচ্ছে। জেলার ১০টি খাদ্য গুদাম থেকেই এসব মালামাল কম দেয়ার অভিযোগ করেছেন জনপ্রতিনিধি, আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহীনি, সামাজিক সংগঠন ও খাদ্য বিভাগের ডিলাররা। অবশ্য জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা একথা সত্য নয় বলে দাবী করেছেন।

অভিযাগগুলো বরিশাল জেলার খাদ্য গুদামের দায়িত্বে থাকা ওসি এলএসসি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেই বেশি। ওসি এলএসসি কর্মকর্তাদের সম্পদের সুষ্ঠু তদন্ত হলে বেরিয়ে আসবে থলের বিড়াল। এদের মাসিক বেতন ২২ থেকে ৩০ হাজার টাকা হলেও এদের বেশির ভাগই ২/৩ বছর একটি গুদামের দ¦ায়িত্বে থাকলেই নতুন জমি কেনার টাকা জোগাড় করে ফেলেন সহজেই। আর এসব টাকার সবই অসাধু পন্থায় আসে বলে একটি সুত্র আশ্বাস দিয়েছে। তারা দুনীর্তি দমন বিভাগকে নিবীর তদন্তের দাবী জানিয়েছেন। অন্যস্থানে দেখা গেছে খাদ্য গুদাম থেকে চাল-গম দেয়ার সময় অত্যন্ত কৌশলের মাধ্যমে প্রতি টন চাল-গমে কম করে হলেও ৪০ কেজি মাপে কম দেয়া হয়। গুদামের বৈদ্যুতিক মাপক যন্ত্রে সুকৌশলে চাল-গম মেপে দেয়ার সময় প্রতি বস্তায় ১ থেকে ৩ কেজি কম দেয়া হয়। মাপক যন্ত্রের বিশেষ পদ্ধতি থাকায় ৫০ কেজি, ৩০ কেজির বস্তায় সব সময় বাড়তি দেখানো হয়।

যারা মালামাল গুদাম থেকে বিতরণ করেন তারা একটি বা দুটি বস্তা মাপ দিয়ে বাকী বস্তাগুলো ঐ হিসেবে দেয়ায় আইে কম দেয়াটা সহজ হয়। এছাড়া খাদ্য গুদামের কতিপয় কর্মকর্তা কর্মচারী প্রতি বস্তা কখনো খুলে আবার কখনো বোংগা মেরে চাল-গম রেখে দেয়। এরা নাকি কর্মকর্তার বিশেষ প্রতিনিধি। এই দুই নম্বর ঘটনা ধামাচাপা দিতে গুদামের ডেলিভারী মালামাল একটি চটি খাতায় লিখে রাখে। পরে যে মালামাল কম দিয়েছে তা রেখে বাকিটা সরকারী মূল খাতায় রাতে উঠানো হয়। নিয়ম রয়েছে ডেলিভারী দেয়ার সময়ই সরকারী মূল খাতায় লিপিবদ্ধ করতে হবে।

কিংবা ঐ আইন কোন ওসি এলএসসি কর্মকর্তা মানেন না। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের এক তথ্যে দেখা গেছে বরিশালের ১০টি উপজেলার ১০টি খাদ্য গুদাম থেকে চাল ডেলিভারী দেয়া হয়েছে ৩৩ হাজার ৯৬৬ মেট্রিকটন ২৭২ কেজি। প্রতি টন সরকারী মূল্যে ৪২ হাজার টাকা হলে ডেলিভারী দেয়া চালের মূল্য হয় ৪ কোটি ৬৫ লক্ষ ৭৩ হাজার টাকা। আর গম দেয়া হয়েছে, ২ হাজার ৮৬৯ মেট্রিকটন ৯৯ কেজি। গমের প্রতিটন সরকারী মূল্যে ২৯ হাজার টাকা হিসেবে এর মূল্য দাড়ায় ৮ কোটি ৩২ লক্ষ ১ হাজার টাকা। অর্থাৎ বরিশালের ১০টি খাদ্য গুদাম থেকে বিভিন্ন খাতে চাল-গম দেয়া হয়েছে ৫০ কোটি ৯৭ লক্ষ ৭০ হাজার টাকার। এক বছরে ডেলিভারী দেয়া চাল থেকে ১৩৩ মেট্রিকটন কম দেয়া হয়েছে অর্থাৎ প্রতিটনে ৪০ কেটি কম দেয়ায় এ চালের সরকারী হিসেবে মূল্য দাঁড়ায় ৫৬ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা। আর গম কম দিয়েছে প্রায় ১২ মেট্রিকটন।

২৯ হাজার টাকা প্রতিটিন হলে এর মূল্য দাঁড়ায় ৩ লক্ষ ৪৮ হাজার টাকা। পাশাপাশি এই সময়ে ১০টি গুদামে চালের ঘাটতি দেখানো হয়েছে ৬৮ মেট্রিকটন১৮৫ কেজি। যার প্রতিকেজি ৪২ টাকা হলে মোট মূল্য দাড়ায় ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। আর গমে ঘাটতি দেখানো হয়েছে ৯ মেট্রিকটন ২২০ কেজি। ২৯ টাকা সরকারী প্রতি কেজির মূল্য হলে এর দাম দাঁড়ায় ২ লক্ষ ৬৭ হাজার ৪৫২ টাকা। গুদামগুলোতে যে ঘাটতি দেখানো হয়েছে বরিশাল জেলায় এ ধরনের ঘাটতি হওয়ার কথা নয়। কারন বরিশালের চাল-গম আনা হয় নৌ-পথে। নৌ পথে পন্য আনা নেয়া হলে জলীয়বাস্পের কারনে চাল-গমের কমতি হয় না বরং বাড়ে। সেখানেও শুভংকরের ফাঁকি দিয়ে ওসি এলএসডি কর্মকর্তারা কয়েক লক্ষ টাকা নিজেদের পকেটে ভরে নেয় এসব ব্যাপারে কেউ কখনো অভিযোগ দায়ের করলেও রহস্য জনকভাবে কোন তদন্ত শেষ পর্যন্ত চুড়ান্ত রুপ নিতে পারেনা।

সরকার কা মাল দরিয়ামে ঢাল অবস্থা হয় শেষ পরিনতি। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে চাল-গমের ১০ গুদামের ঘাটতি দেখানো হয়েছে। টাকার অংকে ৬ লক্ষ ২৭ হাজার ৪৫২ টাকার। জনপ্রতিনিধিরা জানান, গুদাম থেকে চাল-গম নেয়ার পর বাহিরে গিয়ে মাপ দিলেই কম হয়। তাই বাধ্য হয়েই যাদের মধ্যে ঐসব মালামাল দেয়া হয়। তা সব সময়েই কম দিতে বাধ্য হয়। বরিশাল জেলার ১০টি উপজেলা ১০টি খাদ্য গুদাম থেকে প্রতি বছর কাবিখা, ভিজিডি, ভিজিএফ, ফায়ার সার্ভিস, কারাগার, র‌্যাব, পুলিশের বিভিন্ন দপ্তর, ভিজিএফ (মৎস) বিশেষ খাদ্য কর্মসূচি, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি, (১০ টাকার চাল), ঈদ, কোরবানী দূর্গাপুজা, বড়দিনের বিশেষ বরাদ্ধ ও জিআর চাল-গম দেয়া হয়। বরিশালের মুলাদী উপজেলার বাগমারা ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম, সফিপুৃরের ইউপি চেয়ারম্যান আবু মুসা হিমু, নাজিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান সাহাবুদ্দিন পন্ডিত, বাকেরগঞ্জের দাঁড়িয়াল ইউপি চেয়ারম্যান আঃ জব্বার বাবুল, রহমতপুর ইউপি চেয়ারম্যান, মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার চর গোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যান সামসুল বারী মনির, আলিমাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান শেখ সহিদুল ইসলাম, শ্রীপুর ইউপি চেয়ারম্যান হারুন মোল্লা, জাঙ্গালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আঃ কাদের ফরাজী, বাবুগঞ্জের ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করলে তাদের সবার একই বক্তব্য হলো খাদ্য গুদাম থেকে চাল-গম ওজনে কম দেয়া হয়।

এসব ইউপি চেয়ারম্যানরা আরো বলেন, প্রতিটন চাল-গমে ৪০ কেজি থেকে ৬০ কেজি পর্যন্ত কম দেয়া হয়। তাদের বক্তব্যই হচ্ছে চাল-গম চুরি করে সরকারী খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। আর দোষ পড়ে আমাদের জনপ্রতিনিধিদের। এ অবস্থার আশু পরিবর্তন হওয়া প্রয়োজন। এ ব্যাপারে বরিশাল জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) অবনী মোহন দাসের সাথে কথা বললে তিনি এমন ধরনের কথার সত্যতা স্বীকার করেননি। তবে কিছুটা ঘাটতি হয় বলে জানান।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net